
জহির রায়হান,কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধিঃ
কাউনিয়ায় তিস্তার চরাঞ্চলের কৃষকরা সাধারণত রবি শস্যের উপর নির্ভরশীল। এ সময় কৃষকেরা বেগুন, আলু, মরিচ, খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে চলতি মৌসুমে কাউনিয়ায় বেগুনের বাম্পার ফলন ও প্রথমের দিকে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও গত এক সপ্তাহ ধরে বেগুনের দাম কমায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। কাউনিয়ায় উৎপাদিত বেগুন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রফতানি হচ্ছে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়।সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অধিক লাভের আশায় প্রতি বছরই আগাম জাতের বেগুন চাষ করেন কাউনিয়া উপজেলার কৃষকরা। পশ্চিম রাজিব গ্রামের বেগুন চাষিরা কাদের হাজি বলছেন, প্রথম দিকে খেত থেকে এক মণ বেগুন ২৫০০ থেকে ২৮০০ টাকা মণ বিক্রি করলেও গত কয়েক দিন ধরে বেগুনের দামে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই গ্রামের কৃষক বাতেন হাজি জানান কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রতি বছর বেগুনের চাষ করেছি। এ বছর ৪ দোন জমিতে বেগুনের চাষাবাদ করেছি। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় বেগুনের ফলন ভালো হয়েছে। একদোন জমিতে বেগুন চাষে খরচ হয় প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা, প্রথম দিকে প্রায় টানা ১ মাস বেগুনের দাম ভালো ছিল। ইতো মধ্যে সে ৪দোন জমির বেগুন প্রায় ২লাখ টাকার বিক্রি করেছে। কিন্তু হঠাৎ করে বাজারে বেগুনের দাম কমায় একটু খুব দুশ্চিন্তায় আছি। এবছর বেগুন চাষিরা বেশ লাভবান হয়েছে। তার যাবতীয় খরচ বাদ দিয়ে দোন প্রতি ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় হবে। রাজিব গ্রামের কৃষক সিরাজুল জানান, এভাবে বেগুনের ভাল ফলন ও দাম পেলে অন্য চাষিরাও আলু চাষের মতো বেগুন চাষে আগ্রহ বাড়বে। বেগুনের পাইকার জাহেদুল জানান, প্রথমের দিকে বেগুন বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছি, বর্তমানে বাজারে চাহিদা ও দরকম। পাইকার জলিল জানান কাউনিয়া থেকে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ মন বেগুন ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলায় রফতানি করছেন, এতে বহু লোকের কর্মসংস্থান সহ আমাদের বেশ লাখ হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তানিয়া আক্তার বলেন, চাষিদের বেগুন চাষে উদ্বুদ্ধ করা ও বিভিন্ন সহযোগিতা দেওয়ায় এ অঞ্চলের চাষিরা বেগুন চাষে ঝুঁকছেন। এ অঞ্চলের মাটি বেগুন চাষের উপযোগী হওয়ায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৭০ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়েছে। এ বছর বেগুনের পাশাপাশি অন্যান্য ফসলও ব্যাপক চাষাবাদ হয়েছে। কাউনিয়ার বেগুন জেলার চাহিদা পূরণ করে ঢাকাসহ দেশে বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে।