
তানভীর সোহেল,আঞ্চলিক প্রতিনিধি
স্বাধীনের পর শুরু হয় রণাঙ্গনের সাহসী পথচলা। কিন্তু সেই সময়কার শাসকগোষ্ঠীর তোপের মুখে পড়ে রণাঙ্গন। সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা অফিসে হামলা চালিয়ে সব তছনছ করে দেয়। রণাঙ্গণ বাজেয়াপ্ত করে সরকার। পরবর্তীতে বিভাগীয় কমিশনার অফিসে আপিল করে ছাপাখানাটি ফেরত পেলেও রণাঙ্গণের ডিক্লারেশন ফেরত পাননি তিনি।এরপর প্রতিষ্ঠা করেন ‘সাপ্তাহিক মহাকাল’। ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত প্রকাশনা অব্যাহত থাকে ‘সাপ্তাহিক মহাকাল’ এর। পাশাপাশি ১৯৮১ সালের ২৭ মে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘দৈনিক দাবানল’। বাটুল প্রতিষ্ঠিত এই তিনটি পত্রিকায় কাজ করেছেন দেশ বিদেশের প্রথিতযশা অনেক সাংবাদিক। চারণ সাংবাদিক মোনাজাত উদ্দিন, আমেরিকা থেকে প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক ঠিকানা’র সাংবাদিক আব্দুল মালেক, রংপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক বায়ান্নর আলোর নির্বাহী সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মোনাব্বর হোসেন মনা, দৈনিক যুগের আলোর বার্তা সম্পাদক আবু তালেব, বিটিভির রংপুর প্রতিনিধি আলী আশরাফ, এটিএন বাংলার মাহবুবুল ইসলাম ও কেরামত উল্লাহ বিপ্লবসহ অসংখ্য গুণী সাংবাদিক দৈনিক দাবানলের অমর সৃষ্টি। এছাড়াও রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বিদম্যান অধিকাংশ পত্রিকাগুলোও তারই হাতে গড়া সাংবদিকদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত হয়ে আসছে। ‘দৈনিক দাবানল’ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৭৯ সালে মিঠাপুকুর থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
শুধু সাংবাদিকতা, সম্পাদনা আর রাজনীতির মধ্যেই থেমে ছিলেন না বাটুল। মিঠাপুকুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অন্যতম উদ্যোক্তা হিসেবে সেটি প্রতিষ্ঠা করেন। তার হাতে গড়া সংগঠন মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন এখন উত্তরাঞ্চলে সব থেকে প্রতিষ্ঠিত শক্তিশালী সংগঠন। তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ঐতিহ্যবাহী সংগঠন রংপুর খেলাঘর, শিখা সংসদসহ অসংখ্য সংগঠন। সাংবাদিকতায় অনবদ্য অবদান রাখার জন্য রংপুর পৌরসভার সিটিজেন অ্যাওয়ার্ড, রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের মোনাজাত উদ্দিন সাংবাদিকতা স্মৃতিপদকসহ অসংখ্য পদক পেয়েছেন তিনি।
তার বড় ছেলে খন্দকার মোস্তফা মোর্শেদ ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করার পর ব্যবসা করছেন। ছোট ছেলে খন্দকার মোস্তফা সরওয়ার অনু ভারতের মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ করে ব্যবসার পাশাপাশি বর্তমানে পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দেখাশোনা করছেন। একমাত্র কন্যা সোনিয়া মোস্তফা ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেছেনএবং ৩৫ তম বিসিএসে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও অর্থের কাছে মৌখিক পরীক্ষায় হেরে গেছেন উত্তরাঞ্চের কিংবদন্তি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুলের মেয়ে।।
পরিশেষে একটাই কথা– মানবসেবায় নিঃশেষে প্রাণ যে করিয়াছে দান,ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।।