
যখন সমাজের নানা স্তরে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও স্বার্থপরতায় সাধারণ মানুষের আস্থা প্রতিনিয়ত আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে, তখন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার দেউলী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ মঞ্জু এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দেখালেন—মানুষ চাইলে এখনো বিবেক, সততা ও মানবিকতা বজায় রাখতে পারে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ জাকিরুল ইসলাম ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মোছাঃ শারমিন আক্তার জুঁইকে মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করে দেওয়ার আশ্বাসে মোট ৮ হাজার টাকা নেওয়া হয়। এর মধ্যে ১ হাজার টাকা ব্যাংক একাউন্ট খোলার কাজে এবং বাকি টাকা পরীক্ষানিরীক্ষা ও আনুষঙ্গিক খরচ বাবদ দাবি করা হয়।ইউপি সদস্য মঞ্জু নিজেই জানিয়েছেন, তিনি সর্বমোট ৬ হাজার টাকা গ্রহণ করেন—যার মধ্যে ৩ হাজার টাকা বিকাশে এবং বাকি ৩ হাজার টাকা স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে তার হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়।তবে নির্ধারিত সরকারি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ভাতার কার্ড অনুমোদন না হওয়ায়, ইউপি সদস্য মঞ্জু কোনোরকম বিলম্ব না করে বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে পুরো টাকা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং তা সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে স্বচ্ছতার সঙ্গে জাকিরুল ইসলামের পরিবারের হাতে তুলে দেন।এই ঘটনাটি শুধু একটি টাকার লেনদেন নয়—এটি একটি নৈতিক অবস্থান, এক মানবিক বোধের উদাহরণ, যা আমাদের সমাজে আজ বড় প্রয়োজন। যখন ভাতার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে অসৎ আচরণ নিত্যদিনের খবর, তখন ইউপি সদস্য মঞ্জুর এই সৎ ও বিবেকবান পদক্ষেপ আশার আলো দেখায়।স্থানীয় জনসাধারণ তার এই মানবিক ও নৈতিক ভূমিকায় উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। তারা মনে করেন, এমন উদাহরণ সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের বার্তা দেয় এবং অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদেরও জনসেবার আদর্শে অনুপ্রাণিত করে।