প্রকাশের সময়: বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫ প্রিন্ট এর তারিখঃ সোমবার , ২৬ মে, ২০২৫

হারাগাছে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবাদে চলছে রাশেদ ও আলম বিড়ির ফ্যাক্টরি

প্রকাশের সময়: বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫

তানভীর সোহেল,আঞ্চলিক প্রতিনিধিঃ রংপুর
রংপুর হারাগাছে পৌর শহরের সারাই বাজারের রাস্তা ঘেষে জমজমাট ব্যবসা গড়ে তুলেছে রাশেদ এন্ড আলম বিড়ি ফ্যাক্টরীর মালিক।অভিযোগ উঠেছে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় নিয়মনীতি উপেক্ষা করে ভয়াবহভাবে পরিবেশ দূষণ করে আসছে। এতে ওই এলাকার বসবাসরত মানুষ পড়েছে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। সচেতন মহলের দাবি পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকারী অধিদপ্তরের উদাসীনতা আর স্থানীয় প্রশাসনের বিচক্ষণতার কারনে এসব যত্রতত্র প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা সম্ভব হয় না বলে মনে করেন তারা।স্থানীয়দের অভিযোগ প্রেক্ষিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে হারাগাছ পৌর এলাকার সারাই-ভরসার মোড়ের মাঝ বরাবর গড়ে ওঠা এই কারখানায় শিশু-কিশোর বৃদ্ধ শ্রমিক দিয়ে মরণব্যাধি তামাক রিসাইক্লিনের কাজ করানো হচ্ছে।যদিও শিশুশ্রম দন্ডনীয় অপরাধ হলেও এই রাশেদ ও আলম বিড়ির মালিকের কাছে আইন যেনো তাদের কাছে খেলনার মতো।বিভিন্ন অভিযোগ সূত্রে ২৯ শে জানুয়ারি বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে ,দুই প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে কয়েক হাজার মানুষের বসতবাড়ি ঘেষে গড়ে উঠা “রাশেদ এন্ড আলম” নামে তামাক মাড়াই ও বিড়ি ফ্যাক্টরীতে কমলমতি শিশুরা চরম
স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে কোনো রকম মাস্ক ও গ্লাভস ছাড়াই করছে কাজ। মাড়াইকৃত তামাকের মিহিদানায় বাতাস ভারী করে ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ করছে এই দুই প্রতিষ্ঠান। ফলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে মরণব্যাধি রোগ ক্যান্সার,আলচার সহ শিশু-কিশোরদের কাশ-সর্দি ও ব্রংকাইটিস রোগ। এবিষয়ে প্রতিবেদক এর সাথে ওই প্রতিষ্ঠান দুটির মালিক পক্ষের কেউ কথা বলতে নারাজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয়রা প্রতিবেদককে বলেন, বিড়ি,জর্দা তৈরির কাঁচামাল হিসেবে নিষিদ্ধ তামাক পাতা ফ্যাক্টরীতে কোন প্রকার সতর্কতা অবলম্বন না করে পরিবেশ দূষণ করছে “রাশেদ এন্ড আলম” নামের এই তামাক রিসাইক্লিং প্রতিষ্ঠান।অনুসন্ধানে আরো জানাগেছে রাশেদ এন্ড আলম বিড়ি এবং ফ্যাক্টরী পুনঃব্যবহৃত ব্যান্ডরোল লাগিয়ে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। এছাড়াও রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সরকারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে পাবনা-কুষ্টিয়া,নীলফামারী-পন্চগড়সহ বিভিন্ন জেলা উপজেলায় বিড়ি ও গুল বাজারজাত করে আসছে।স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন,পুনঃব্যবহৃত ও জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে ২৫ শলাকার প্রতি প্যাকেট ৫-৮ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সর্বোচ্চ ১০ টাকা মূল্যে বিড়ি বিক্রয় করছে। অথচ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট অনুযায়ী ২৫ শলাকার প্রতি প্যাকেট বিড়ির সরকার নির্ধারিত মূল্য ২০ টাকা। এরমধ্যে রাজস্ব বাবদ (ব্যান্ডরোলের মূল্য ৮.১০ টাকা, অগ্রীম আয়কর ৪.৮১ টাকা এবং স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ০.১৮ টাকা সর্বমোট ৯.০৯ টাকা) সরকারকে ১০.০৯ টাকা দিতে হয়। এছাড়া বিড়ি শ্রমিকদের পারিশ্রমিক, বিড়ি তৈরির কাগজ ক্রয় এবং তামাক ক্রয়সহ আরও অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় উৎপাদন খরচ রয়েছে।নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক বিড়ি ব্যবসায়ী জানান, আসল ব্যান্ডরোল লাগিয়ে বিড়ি বিক্রি করলে তেমন লাভ হয় না, বেশির ভাগই লস হয়। তাই নকল ব্যান্ডরোল লাগিয়ে সিংহভাগ বিড়ি ব্যবসায়ী বিড়ি বাজারজাত করে। তবে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এই কাজ অতি সহজেই তারা বরাবরই করে আসছেন বলে তিনি জানান।ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মনোয়ারুল ইসলাম দৈনিক খবরের আলো পত্রিকা-কে বলেন,‘কারখানার পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্র নেই।কারখানা মালিক সম্পদশালী হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করতে সাহস পায় না। এ কারণে তিনি অবৈধভাবে কারখানাটির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। দ্রুত এটি বন্ধ করা প্রয়োজন।এ বিষয়ে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘সবুজ আন্দোলন’ রংপুর জেলার সভাপতি গোলাম রব্বানী দুলাল দৈনিক খবরের আলো পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারি বিধি-নিষেধ না মেনেই গড়ে ওঠা কারখানাটিতে বিড়ি,গুল,জর্দা তৈরির কাচামাল প্রস্তুত হওয়ায় সেখানকার পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। তাই জনস্বার্থে অবৈধ তামাক প্রস্তুতকারী কারখানাটি বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি।পরিবেশ অধিদপ্তর উপ পরিচালক কমল কুমার বর্মন, তিনি প্রতিবেদককে জানান, আমরা পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় যথাযথ ভাবে কাজ করছি,রাশেদ বিড়ি ফ্যাক্টরীর খবর আমাদের জানা ছিলোনা, বিষয়টি আমলে নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোঃ আফফান হোসাইন আজমীর (ডিএমএফ), বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ এস,এম,সি রোড, গুপ্তপাড়া, রংপুর। mdaffanhossainazmir@gmail.com. যোগাযোগঃ ০১৭৬১৩৩২৩৬৭

প্রিন্ট করুন