শহিদুজ্জামান বাবু, খুলনা ব্যুরো প্রধানঃ ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ভিডিও ব্যবসায়ী মানিক হোসেনকে (৩৫) পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ করছেন তার পরিবার। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে শৈলকুপা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন মানিকের বড় ভাই মনিরুল ইসলাম ও মানিকের স্ত্রী শাবনুর খাতুন সহ পরিবার। গত ২৫ নভেম্বর নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হলেও পরিবারের অভিযোগ এটি হত্যাকাণ্ড।
সংবাদ সম্মেলনে মানিকের বড় ভাই মনিরুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ২৪ নভেম্বর (রোববার) শৈলকুপা পৌর এলাকার ফাজিলপুর নতুন ব্রীজের পাশে সাজ্জাত হোসেনের চায়ের দোকানে মানিক চা পান করতে যায়। এ সময় তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে মানিকের সাথে সাজ্জাতের কথাকাটির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে ফাজিলপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে সাজ্জাত হোসেন, লালু শেখের ছেলে সাহেব আলী, শমসের আলীর ছেলে আমজাদ হোসেন এবং বিজুলিয়া গ্রামের জমির শেখের ছেলে আকমল শেখ তাকে বেপরোয়া মারধর করে মাটিতে ফেলে দেয় এবং হত্যার হুমকি দেয়। এ সময় মানিকের ব্যক্তিগত মোবাইল কেড়ে নেয় হামলাকারীরা। মোবাইল ও মেমোরিকার্ড ফেরত চাইলে হত্যার হুমকি দেয় তারা। এঘটনার পর মানিক নিজ প্রতিষ্ঠানে ভিডিও এডিটিং এর কাজ করতে থাকে। পরদিন সকাল থেকে মানিকের সাথে আর যোগাযোগ করতে পারেনি পরিবার, তার মোবাইল বন্ধ ছিল। ২৫ নভেম্বর সোমবার সন্ধায় মানিকের মৃতদেহ তার দোকানে উদ্ধার করে পরিবারের সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে মানিকের বড় ভাই মনিরুল দাবি করেন মানিক নিহতের ঘটনা পরিকল্পিত ও হত্যার শিকার। এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকেস সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি দেখতে চায় পরিবারের সদস্যরা। তার বড় ভাই ও মানিকের স্ত্রী শাবনুর খাতুন বলেন, ঘটনাটি অনেকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। তাদের অভিযোগ, কেনো ঘিরে ধরে বেধড়ক মারধর করা হয় এবং তার ব্যক্তিগত মোবাইল কেড়ে নেয়া হয়, এসবের পরপরই মৃতদেহ পাওয়া যায়। এসব ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করতে হবে। এমন মৃত্যু হত্যাকাণ্ড বলে স্থানীয়রাও বলছে। বিষয়টি চ্যাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে চা দোকানী সাজ্জাত হোসেন বলছেন, পরিকল্পিতভাবে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। মোবাইলে একজন নারীর আপত্তিকর ভিডিও নিয়েই তার সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ নভেম্বর রাত ৯টার দিকে শৈলকুপার ফাজিলপুরের মানিক ভিডিও এন্ড টেলিকম থেকে ব্যবসায়ী মানিক হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ উদ্ধারের পর তার গলায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। চিকিৎসক বলেছিলেন মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। মানিক এলাকায় খুবই পরিচিত এবং ভাল একজন ভিডিও ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচিত। পাশাপাশি প্রায় এক দশক ধরে ওয়াজ-মাহফিল, বিয়ের অনুষ্ঠান সহ নানা বিষয়ে ইউটিউব কনটেন্ট তৈরী করে অর্থ উপার্জন করতেন। সে উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের হাজরামিনা গ্রামের কিতাব উদ্দিনের ছেলে।
Leave a Reply