হামিদুর রহমান,তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধি:
রাজশাহীর তানোরউপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করেছে রাজশাহী জেলা বিএনপি। দলীয় নির্দেশনা অমান্য এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক বিশ্বনাথ সরকার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়। এর অনুলিপি বৃহস্পতিবার স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো হয়। পাশাপাশি অধ্যাপক বিশ্বনাথ সরকার মোবাইল ফোনে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহোদয়ের নির্দেশে তানোর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। এর আগে উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নে আয়োজিত বিএনপির ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে দলীয় অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বিএনপি নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান মোমিনুল হক মোমিনের ভাই গানিউল হক নিহত হন। এ ঘটনার পর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিজান এবং পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রভাষক মজিবুর রহমানকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কারের প্রতিবাদে বুধবার মিজান অনুসারী নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যার পরিপ্রেক্ষিতে সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা বিএনপি। দলীয় সূত্রে জানা যায়, মার্চ মাসে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের পর তানোরে বিএনপির রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রাণহানির দুটি ঘটনা ঘটে।
১ এপ্রিল মঙ্গলবার, তানোর উপজেলার রাতৈল গ্রামে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নেকসার আলী (৩৫) নামে এক কৃষকদল নেতা মারা যান। তিনি চান্দুড়িয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড কৃষকদলের সেক্রেটারি এবং রাতৈল গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
এর আগে ১১ মার্চ, পাঁচন্দর ইউনিয়নে বিএনপির ইফতারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত হন গানিউল হক। এসব ঘটনায় বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল আরও চরমে পৌঁছায়। দুটি পৃথক ঘটনার জেরে থানায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ে তানোর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল হান্নান বলেন, “সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিতের বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি পাইনি। তবে নেতাকর্মীদের মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছি। কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং সহিংসতার ঘটনায় তানোরে বিএনপির রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থির হয়ে পড়েছে। নেতাকর্মীদের মাঝে আতঙ্ক এবং চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
Leave a Reply