1. admin@alokitopotrika.com : alokitopotrika_560 :
বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ০৭:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদ পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক, দিলেন বিভিন্ন অনুদান নওগাঁর রাণীনগরে আওয়ামীলীগের ইউনিয়ন নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ কিশোরগঞ্জে সরকারি খাস জমির উপর দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধের অভিযোগ আত্রাইয়ে আইনজীবী ভাতিজা কর্তৃক জমি আত্মসাতের চেষ্টার প্রতিবাদে প্রতিবন্ধী চাচার সংবাদ সম্মেলন কাউনিয়ায় বিসিডিএসের মানববন্ধন লালমনিরহাটের পাটগ্রামে দেড় যুগ পর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত গাইবান্ধার আইন ফুলছড়িতে শৃংখলা কমিটির সভা শেষে ৬ ইউপি চেয়ারম্যান আটক প্রবাসীর ভালোবাসায় মানবিক উদ্যোগ—গাবতলীর দক্ষিণপাড়ায় দুস্থদের মাঝে টিন বিতরণ পীরগাছায় পানি নিষ্কাশনের জায়গা প্রশস্ত না থাকায় তলিয়ে গেছে চার একর জমির আবাদি ফসল আখাউড়ায় এমসি বাণিজ্যের দায়ে, হাসপাতালে মালি সোহেল মিয়া বদলী, ভুক্তভোগী হেলাল মিয়া!

আধুনিকতায় বিলুপ্তির পথে কাউনিয়ায় গ্রামীন ঐতিহ্য কুঁড়ে ঘর এখন শুধুই স্মৃতি

  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫
  • ৩১ বার পাঠ করা হয়েছে

জহির রায়হান,কাউনিয়া(রংপুর)প্রতিনিধিঃ আধুনিকতায় ইটপাথরের তৈরি অট্টালিকার দাপটে রংপুরের কাউনিয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের নিদর্শন সবুজ শ্যামল ছায়া-ঘেরা শান্তির নীড় কুঁড়ে ঘর। যা এক সময় ছিল গ্রামের মানুষের কাছে গরীবের এসি বাড়ি নামে পরিচিত। চৈত্রের তাপদাহ আর জ্যৈষ্ঠের প্রখর গরমে একটু বিশ্রামের আশায় রংপুর অঞ্চলের মানুষ যখন কুঁড়ে ঘরে আশ্রয় নিত (গরীবের এয়ার কন্ডিশন ঘর) তখন সেই কুঁেড় ঘরই ছিল এ অঞ্চলের মানুষের শান্তির স্বর্গ আর রাতে মাথা গোজবার একমাত্র ঠাঁই। এখন আর সেই দিন নেই, আধুনিকতা ও দিন বদলের পালায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীন ঐতিহ্য কুঁড়ে ঘর। বর্তমানে এ সব কুঁড়ে ঘর এখন নেই বললেই চলে।সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাংলার ঐতিহ্য বাঁশ আর খরের ছাউনিতে তৈরী কুঁড়ে ঘর এখন আর নেই বললেই চলে। যদিও বা কালে ভাদ্রে এক-আধটি চোখে পড়ে তারও খুবই জীর্ণ দশা। কুঁড়ে ঘরের কথা মনে করিয়ে দেয়ে বিখ্যাত কবি রজনীকান্ত সেন এর লেখা ‘স্বাধীনতার সুখ’ কবিতায়। তার কবিতায় লিখেছেন, বাবুই পাখিরে ডাকি, বলছে চড়াই, কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই, আমি থাকি মহাসুখে অট্রালিকা পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ বৃষ্টি ঝড়ে। আগের দিনে সমাজের প্রভাবশালীদের কাচারী ছিল কুঁড়ে ঘরের। সাধারণত ধানের খড় বা কাঁশফুলের কাশি দিয়ে নির্মাণ করা হতো খরের চালা বা ঘর। কখনো গম বা জবের খড় ব্যবহার করা হতো। অগ্রহায়ণ থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত নতুন ধানের খড় দিয়ে ঘর নির্মাণ করা হতো। আগে গ্রামের প্রতিটি বাড়ীতেই ছিল কুঁড়ে ঘর সেখানে এখন গড়ে উঠেছে টিন ও ইট সিমেন্টের বাড়ী। উন্নয়নের ধারায় আধুনিকতার ছোঁয়ায় কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কুঁড়ে ঘর। আমাদের প্রজন্মকে হয়তো বা কুঁড়ে ঘর চেনার জন্য যাদুঘরে যেতে হবে। কুঁড়ে ঘর এখন পল্লীকবি জসিম উদ্দিনের কবিতার মধ্যে আছে। কবিগুরু তার কবিতায় লিখেছিলেন, একটুখানি হাওয়া দিলে ঘর নড়বড় করে, তারি তলে আসমানীরা থাকে বছর ভরে। গ্রাম বাংলার দৃষ্টি নন্দন কুঁড়ে ঘর দেশের অভিজাত এলাকার চিলে কোঠায় বা সুইমিংপোলের পাশে শোভা পাচ্ছে এখন। উপজেলার গদাই গ্রামের শাহাজাহান জানান খর ও বাঁশের দাম বেশী হওয়ায় এবং প্রতি বছর কুঁড়ে ঘর মেরামত করতে হয় বলে গ্রামের মানুষ এখন কষ্ট করে টিনের ঘর তুলেছে। চর ঢুসমারা গ্রামের তাজুল ইসলাম জানায় কুঁড়ে ঘরে অনেক শান্তি। কুঁড়ে ঘর হলো গরীবের বিশেষ করে চরের মানুষের এসি-ঘর। কুঁড়ে ঘরে গরমে যেমন শীতল আবার শীত কালেও এ ঘর থাকে উষ্ণ। নাজিরদহ গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি নুরুল হক (৭০) আঞ্চলিক ভাষায় বলেন ‘তোমরা যাই কন বাহে এলাও হামার খেরের ঘরে থাকার কথা ভুলবার পাওনা!’ ‘হামরায় দেখনো গ্রামের সবার বাড়ীর চাইরো পাকে (চার দিকে) খের আর ছনের ঘর আর এলা চাইরো পাকে দেখি খালি টিনের ঘর। গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্য সংরক্ষন করা প্রয়োজন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিদুল হক বলেন, সরকারের নানা উদ্যোগের ফলে মানুষের আয় বেড়েছে। পরিবর্তন এসেছে জীবন জীবিকায়। তাই খড়ের ঘরের পরিবর্তে নির্মাণ করছেন টিনের ঘর বা আধা পাকা ও পাকা বাড়ি। গ্রামের ঐতিহ্য কুঁড়ে ঘর এখন শুধুই স্মৃতি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2024