1. admin@alokitopotrika.com : alokitopotrika_560 :
রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার আবেদন বিজ্ঞপ্তি তানোরে বিলুপ্তপ্রায় ধানের গোলা ও ধান ভাঙ্গানো মিল: হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ ঐতিহ্য ঝিনাইদহে পিতার ভূল সিদ্ধান্ত ও কবিরাজের ঝাড়ফুকে প্রান গেল এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পীরগাছা প্রেসক্লাবের সভাপতি বিপ্লব, সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুছ বগুড়া-নাটোর মহাসড়কে ভটভটি উল্টে চালক নিহত মিঠাপুকুরে দখলকৃত জমিকে অন্যের দখল দেখিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগ নওগাঁর রাণীনগরে এক মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রের মরদেহ মসজিদে ঝুলেছিল কাউনিয়া প্রেসক্লাবের প্রথম আলোচনা সভা কাউনিয়ায় স্ত্রীর সাথে অভিমান করে স্বামীর আত্মহত্যা গাইবান্ধা ডিসি ফুটবল টুর্নামেন্টে গোবিন্দগঞ্জের  বিজয়,আনন্দ উল্লাসে মুখরিত জেলা স্টেডিয়াম

ঝিনাইদহে পিতার ভূল সিদ্ধান্ত ও কবিরাজের ঝাড়ফুকে প্রান গেল এইচএসসি পরীক্ষার্থীর

  • প্রকাশিত : শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫
  • ৫ বার পাঠ করা হয়েছে

শহিদুজ্জামান বাবু, খুলনা ব্যুরো প্রধানঃ রাতে বাবার সাথেই ঘুমিয়ে ছিল এইচএসসি পীক্ষার্থী অপু বিশ্বাস (১৯)। রাত তিনটার দিকে বুঝতে পারে তার আঙ্গুলে জ্বালাপুড়া করছে। বাবাকে ডেকে ঘটনাটি বললে তিনি দেখতে পান আঙ্গুল দিয়ে রক্ত ঝড়ছে। সাথে সাথে গ্রামের ওঝা ফারুক হোসেন ফুরুর বাড়িতে শুরু হয় ঝাড়ফুঁকের। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে ভোরে অবস্থার অবনতি হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চলছিল চিকিৎসার প্রস্তুতি। কিন্তু পরিবার  চিকিৎসকের ওপর ভরসা না পেয়ে সেখান থেকে পুনরায় ওঝার বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় সাপে দংশিত অপু বিশ্বাস। ঘটনাটি শনিবার (১২ জুলাই) ভোরে ঝিনাইদহের শৈলকুপার ব্রম্মপুর গ্রামে। 

অপু বিশ্বাস উপজেলা ৬নং সারুটিয়া ইউনিয়নের ব্রম্মপুর গ্রামের সেকেন্দার জোয়ার্দ্দারের ছেলে। সে  শৈলকুপা সিটি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। সাপে দংশনের পর দীর্ঘ সময় পার হলেও বাবার, ছেলের চিকিৎসার ভুল সিদ্ধান্তে এমন মৃত্যুতে অপুর সহপাঠি ও এলাকাবাসীদের মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

অপুর পিতা সেকেন্দার জোয়ার্দ্দার বলেন, রাতে একমাত্র ছেলে অপুর সাথে ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি। রাত তিনটার দিকে অপু ঘুম থেকে উঠে তাকে জানায়, তার আঙ্গুলে কিসে কামড় দিয়েছে। সাথে সাথে তাকে গ্রামের ওঝা ফারুকের বাড়িতে নেওয়া হয়। সেখানে ওঝার দেয়া গাছে ছেলে সুস্থতা বোধ করলে তারা বাড়িতে আসেন। ছেলে অপু ঘুমিয়ে পড়লে এইচএসসি পরীক্ষার্থী বিধায় ভোরে ছেলেকে পড়ার জন্য জাগানো হয়। ঘুম থেকে উঠে অপু পুনরায় অসুস্থতা বোধ করলে তাকে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। চিকিৎসকরা তার চিকিৎসার জন্য প্রস্ততি নিতে থাকলে পুনরায় তাকে পৌর এলাকার ঋষিপাড়ায় ওঝার বাড়িতে নিলে তার অবস্থার আরো অবনতি হতে থাকে। ওঝা তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চিকিৎসক কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে সকাল সাড়ে আটটার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে জানান অপুর বাবা সেকেন্দার জোয়ার্দ্দার। 

অপুর সহপাঠি রবিন হোসেন বলেন, তারা স্কুলে থেকেই এক সাথে পড়ালেখা করে আসছে। অপু খুবই মেধাবী ছিল ও চঞ্চল প্রকৃতির। সাপের দংশনের পর পরিবারের ভুল চিকিৎসায় তার এমন মৃত্যু তারা মেনে নিতে পারছে না বলে জানান।

অপুর প্রাথমিক ঝাড়ফুকের ওঝা ফারুক হোসেন ফুরু বলেন, তিনি দীর্ঘ ২০ বছর সাপের কামড়ের চিকিৎসা করে আসছেন। অপুর পিতা সেকেন্দার তার ছেলেকে নিয়ে আসেন শনিবার ফজরের আযানের আগে। তিনি তাকে গাছের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়ার পর সে সুস্থ হলে বাড়ি চলে যান। এরপর সকাল ৯টার দিকে তিনি জানতে পারেন সাপে দংশিত অপু কুষ্টিয়াতে মারা গেছে। তবে তার চিকিৎসায় কোনো ভুল নেই বলে ওঝা ফুরু দাবি করেন।

শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শনিবার ভোরে ব্রম্মপুর গ্রামের এইচএসসি পরীক্ষার্থী অপুকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়্। তার লক্ষণ দেখে বোঝা যায় সে সাপে দংশিত। তার চিকিৎসার প্রস্ততি চলাকালে রোগীর স্বজনরা তাকে জোরপূর্বক পূনরায় ওঝা বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে পুনরায় হাসপাতালে নিয়ে আসলে তারাি অপুকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। এরপর তার মৃত্যু হয়েছে বলে তারা জানতে পারেন। তার পরামর্শ সাপে দংশন করলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসলে তার জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে না বলে জানান।ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শৈলকুপা থানার ওসি মাসুম খান।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2024