1. admin@alokitopotrika.com : alokitopotrika_560 :
বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কাউনিয়া প্রেসক্লাবের সাথে উপজেলা জামায়াতে ইসলামী নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় বিতর্কিত ইউএনও শেখ রাসেল পীরগাছায় বদলি, উঠছে নানা প্রশ্ন সার্চ মানবাধিকার সোসাইটি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শাখার আয়োজনে ১৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত থানা ভাঙচুর ও আসামী ছিনিয়ে নেয়ার মামলায় গ্রেফতার আরও ২ নন্দীগ্রামে বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ করলেন সাবেক এমপি মোশারফ স্বরশৈলী আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্রের পরিচালক প্রফেসর মোহাম্মদ শাহ আমলের জন্মদিন উদযাপন নওগাঁতে স্বাস্থ্য সহকারীদের ৬ দফা দাবীতে অবস্থান  ঝিনাইদহে পিকআপভ্যানের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত নন্দীগ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দই ব্যবসায়ী কে অর্থদন্ড প্রদান জগতবেড়ে জমি নিয়ে দন্ড বিরোধের জেরে চুরির অপবাদের অভিযোগ

সভাপতি নিয়োগে হঠকারিতা, অচলাবস্থায় তানোরের ঐতিহ্যবাহী তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজ

  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
  • ৫৭ বার পাঠ করা হয়েছে

হামিদুর রহমান, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজে গভর্নিং বডির সভাপতির পদ নিয়ে তৈরি হয়েছে চরম অচলাবস্থা। কলেজ পরিচালনায় স্থবিরতা দেখা দেওয়ায় মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ। স্থানীয়রা বলছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের হঠকারী সিদ্ধান্তই এই সংকটের মূলে।
ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আজ সংকটে ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজ একসময় শিক্ষার মান ও অবকাঠামোগত দিক দিয়ে ছিল জেলার সেরা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি। শহর থেকে দূরে হলেও এই কলেজে ছিল আবাসনের সুযোগ। ফলে দূরদূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা এসে এখানে পড়াশোনা করতেন। তবে গত এক দশকে শিক্ষক নিয়োগসহ নানা অনিয়মের কারণে কলেজটি তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।গভর্নিং বডিতে অনিয়ম, নতুন সভাপতি নিয়ে দ্বন্দ্ব
কলেজ গভর্নিং বডির পূর্বতন সভাপতি পদে থেকে একাধিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি ও দলীয়করণের অভিযোগ উঠে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এসব অনিয়ম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। সরকার পরিবর্তনের পর কলেজে স্বাভাবিকতা ফিরতে শুরু করলেও সম্প্রতি সভাপতির পদ নিয়েই ফের সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থা। ২০২3 সালের শেষ দিকে কলেজের এডহক কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে মনোনীত হন সাবেক অধ্যক্ষ ও কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সেলিম উদ্দিন কবিরাজ। তার সাবেক অবদান ও শিক্ষাক্ষেত্রে ভূমিকার কারণে স্থানীয়দের মধ্যে ছিল ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা। পরবর্তীতে নিয়মিত গভর্নিং বডি গঠনের লক্ষ্যে কলেজ কর্তৃপক্ষ তিনজনের নাম প্রস্তাব করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠায়—সেলিম উদ্দিন কবিরাজ, আইনুল হক এবং দেওয়ান মো. মকসেদুর রহমান।তবে তালিকাভুক্ত তিনজনকে উপেক্ষা করে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ফনির উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে সভাপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে চিঠি পাঠায়। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মো. জসিম উদ্দীন মৃধাসহ ৬৩ জন শিক্ষক বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে আবেদন করেন।
পরবর্তীতে গভর্নিং বডির সদস্যরা ফনির উদ্দিনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং ১১ মার্চ ডাকা সভায় কেউ উপস্থিত হননি। একাধিক চিঠি চালাচালির পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ২৯ এপ্রিল পুনরায় সেলিম উদ্দিন কবিরাজকে সভাপতি মনোনীত করে। তবে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ৩০ এপ্রিল আবারও ফনির উদ্দিনকে সভাপতি করে নতুন চিঠি ইস্যু করে। এই সিদ্ধান্ত কলেজ কর্তৃপক্ষ ৪ মে হাতে পায়। এই ঘটনায় কলেজজুড়ে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। গভর্নিং বডির সদস্যরা ফনির উদ্দিনের নেতৃত্ব মানতে নারাজ, ফলে ধারাবাহিকভাবে তিনটি সভা ডাকা হলেও কোনো সদস্য উপস্থিত হননি। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জানান, সভাপতির সঙ্গে কাজ করতে সদস্যরা আগ্রহী নন, যার ফলে পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক ও সচিব আমিনুল আক্তার বলেন, ‘তালন্দ কলেজ নিয়ে আমরাও বিপাকে আছি। একবার সভাপতি নিযুক্ত করি, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। পরিবর্তন করলে ওপর থেকে ফোন আসে। একে বাদ দিলে আরেকজনকে বসাতে হয়। এত চাপের মধ্যে আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে।’ তিনি আরও জানান, এবার নির্বাচনের মাধ্যমে সভাপতি ঠিক করার প্রক্রিয়া শুরু করার কথা ভাবা হচ্ছে।
এদিকে, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ ১২ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি লিখেন, ‘এভাবে সভাপতির পদে বারবার পরিবর্তন এনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অস্থির করে তোলা হচ্ছে, যা শিক্ষার পরিবেশের জন্য হুমকি।সেলিম উদ্দিন কবিরাজ বলেন, ‘আমার ছাত্র ফনির উদ্দিনকে নিয়ে কিছু বলার নেই, কিন্তু যেভাবে আমাকে বাদ দিয়ে তাকে সভাপতি বানানোর চেষ্টা চলছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এর মাধ্যমে কলেজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা হচ্ছে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে সভাপতি ফনির উদ্দিন প্রথমে ফোনে সভায় আছেন বলে জানান এবং পরবর্তীতে একাধিকবার ফোন করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজের সভাপতির পদ নিয়ে চলমান দ্বন্দ্ব দ্রুত সমাধান না হলে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার মান ও সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। সংশ্লিষ্টদের দ্রুত কার্যকর ও গ্রহণযোগ্য সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে স্থানীয় সমাজ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2024