1. admin@alokitopotrika.com : alokitopotrika_560 :
শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ১১:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বুড়িমারী স্থলবন্দর এখনো পর্যন্ত ফ্যাসিস মুক্ত হয় নি বলে এবি পার্টির বিক্ষোভ মিছিল অবস্থান কর্মসূচি ও সংবাদ সম্মেলন শিবগঞ্জে শ্বশুরের কুৎসিত রূপ: পুত্রবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদ পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক, দিলেন বিভিন্ন অনুদান নওগাঁর রাণীনগরে আওয়ামীলীগের ইউনিয়ন নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ কিশোরগঞ্জে সরকারি খাস জমির উপর দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধের অভিযোগ আত্রাইয়ে আইনজীবী ভাতিজা কর্তৃক জমি আত্মসাতের চেষ্টার প্রতিবাদে প্রতিবন্ধী চাচার সংবাদ সম্মেলন কাউনিয়ায় বিসিডিএসের মানববন্ধন লালমনিরহাটের পাটগ্রামে দেড় যুগ পর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত গাইবান্ধার আইন ফুলছড়িতে শৃংখলা কমিটির সভা শেষে ৬ ইউপি চেয়ারম্যান আটক প্রবাসীর ভালোবাসায় মানবিক উদ্যোগ—গাবতলীর দক্ষিণপাড়ায় দুস্থদের মাঝে টিন বিতরণ

জনগনের আস্থা নষ্ট হয় এমন কাজ করা যাবে না- তারেক রহমান

  • প্রকাশিত : বুধবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫
  • ৩৪ বার পাঠ করা হয়েছে

শহিদুজ্জামান বাবু, খুলনা ব্যুরো প্রধানঃ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপির ৩১ দফা কেবল দেশ ও দেশের মানুষের জন্য। ৩১ দফার মাধ্যমে আমরা দেশের মানুষের শুভ পরিবর্তন ঘটাতে চাই, যেটি মানুষ প্রত্যাশা করে। এই পরিবর্তন কোন যাদু বা ম্যাজিক নয় যে, বলবো আর হয়ে যাব। এজন্য জনগনের আস্থা ধরে রাখার জন্য নিজেদের পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের মন মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। তাই আমাদের ভাবনায় শুধুই জনগন, জনগন ও জনগন। শুধু তাই নয়, এই ৩১ দফা বাস্তবয়নের মাধ্যমে আমরা সকল জুলুম নির্যাতনের প্রতিশোধ নেব। 

আমি প্রতিবারই বলছি সামনের পথ মোটেও মসৃন নয়। বিএনপির বিরুদ্ধে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এ সকল ষড়যন্ত্র মোবাবেলা করে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। জনগের আস্থা নষ্ট হয় এমন কোন কাজ করা যাবে না। মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জনে দলের নেতাকর্মীদের এক থাকতে হবে। বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মীকে এখন থেকেই প্রস্তৃতি নিতে হবে। 

তারেক রহমান বুধবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ, যশোর ও নড়াইল জেলা বিএনপি আয়োজিত “রাষ্ট্র্রকাঠামো মেরামতে ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি” শীর্ষক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন। 

ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি স্থানীয় জোহান ড্রিম ভ্যালি পার্ক মিলনায়তনে এই কর্মশালালার আয়োজন করে। তারেক রহমান আরো বলেন, বিএনপি একটি জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধের ডাক দিয়ে নিজে রনাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন। আবার দেশ পরিচালনায়ও তিনি খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। দেশের মানুষকে সংগঠিত করে কিভাবে দেশ গঠন ও পরিচালনা করতে হয় তা তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন। তাই দেশের প্রতিটি কমবেশি নিরপেক্ষ নির্বাচনে বিএনপিকে মানুষ ভোট দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় পাঠিয়েছে। এটি বিএনপির সবচে বড় অর্জন। যতদিন পৃথিবী থাকবে ততদিন এটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। 

তিনি বলেন, ৭১ সালে যুদ্ধের সময় কোন দল বর্ডার টপকে ভারতে আমোদ প্রমোদ করে কাটিয়েছেন। আবার কোন দল স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরোধীতা করেছেন। তিনি বলেন দেশ প্রেম ঈমানের অঙ্গ। দেশের মানুষের অধিকার রক্ষা করাও এই ঈমানের মধ্যে পড়ে। তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের আমলে ১৬ বছরে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা খুন গুম, হামলা মামলার শিকার হয়েছেন। দেশ ও দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কর্মীরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। জনগণের একটি বিশাল অংশ বিশ্বাস করে, আগামীতে দেশের যদি ভালো কিছু হয়, সেটা বিএনপির দ্বারাই হবে। স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশ গঠনে নিজেই মাঠে ঘাটে হেঁটে হেঁটে কাজ করেছেন। আমরা দেখেছি ৭১ সালে একটা দল মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়ে দেশ ছেড়ে নিরাপদ স্থানে পালিয়ে গিয়েছিল। আরেকটি দল মহান মুক্তিযুদ্ধের সরাসরি বিরোধিতা করেছে। কিন্তু বিএনপি এমন একটি দল যারা মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তীতে দেশ গঠনে নিরলস ভাবে কাজ করেছে। আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অপেক্ষায় আছি। জনগণ বিএনপিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আনার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। আগামী নির্বাচনে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে হলে আমাদের সকল নেতাকর্মীকে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে।

তিনি নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহল প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। দেশের ভিতরে ও বাইরে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। ষড়যন্ত্র করে বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাবে না। কারণ, বিএনপি জনগণের দল। নিজেদেরকে জনগণের আস্থায় নিয়ে যেতে হবে। নিজেদেরকে শুধরাতে হবে। দেশের প্রতিটি খাত ধ্বংস করে দিয়ে গেছে স্বৈরাচার হাসিনা সরকার। কাজেই, আগামীতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সকল দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ ফিরতে পারবে না। 

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধ গ্রহণ করা যাবে না। আমরা বাংলাদেশের মানুষের জন্য ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই সকল প্রতিশোধ নেবো। আমি মনেকরি, ৩১ দফার বাস্তবায়নই বড় প্রতিশোধ। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের সবচেয়ে বড় দল বিএনপি। এজন্য আমাদের দায়িত্ব অন্য দলগুলোর চেয়েও বেশি। 

৩১ দফা নিয়ে নেতাকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় অপ্রয়োজনীয় খরচ যদি কমানো যায়, দুর্নীতি রোধ করা গেলে বেকার ভাতা সহ অন্যান্য খাতে ভাতা ব্যবস্থা চালু ও ভাতা বৃদ্ধির করা সম্ভব। আমরা সেটা নিয়ে কাজ করব। 

বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটির আয়োজনে কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু। ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনার সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক ড. মোরশেদ হাসান খান, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য ব্যারিষ্টার মীর মো হেলাল উদ্দিন, মো. আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, ফারজানা শারমিন পুতুল, বিএনপির সহ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, ঝিনাইদহ সদর থানা বিএনপির সভাপতি মুন্সি কামাল আজাদ পান্নু, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল মজিদ বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুর রহমান পাপ্পু, জেলা যুবদলের সভাপতি আহসান হাবীব রনক,সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম পিন্টু, হুমায়ুন বাবর ফিরোজ, জেলা জাসাসের আহবায়ক এম এ কবীর, আসিফ ইকবাল মাখন, এস এম সমেনুজ্জামান সমেন, মুশফিকুর রহমান মানিক ও রাসেল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

তারেক রহমান বলেন, পতিত স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের প্রশ্রয়ে কিছু মানুষ ঋণের নামে ব্যাংকগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকার সেটি কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছে। বর্তমান সরকার ব্যাংকগুলোকে আইন ও ব্যাংকিং নীতির আলোকে ঢেলে সাজানোর কাজ করছে। এখানে বড় চ্যালেঞ্জ, জনগণ ও গ্রাহকের আস্থা অর্জন করা। আমরা বিশ্বাস করি, ব্যাংকিং খাতে আস্থা ফেরাতে সরকার কাজ করবে। আমরাও এটা নিয়ে কাজ করব ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, পলাতক স্বৈরাচারের দলীয় আদর্শের না হওয়ায় লাখ লাখ যুবক চাকরি পায়নি। বিএনপি সেই সকল যুবকদের নিয়ে চিন্তা করছে। পতিত স্বৈরাচারের দ্বারা যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, তাদেরকে আমরা সহযোগিতা করার চেষ্টা করব। 

তিনি বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে প্রতিটি পরিবারে একটি করে ফ্যামিলি কার্ড দেবো। যে কার্ডের মাধ্যমে দেশে উৎপাদিত পণ্য প্রতিটি পরিবারের মাঝে যেন পৌছে দিতে পারি। তারেক রহমান বলেন, আমাদের সমাজের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ নারী। নারীদের সুরক্ষার জন্য দলীয় ভাবে আমরা সর্বোচ্চ উদ্যোগ নেয়া হবে। নারী শিক্ষা অবৈতনিক করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। আমাদের নারীরা এখন সচেতন। এখন নারীদের দৃঢ় ভাবে দেশ গঠনে এগিয়ে আসতে হবে। 

তিনি বলেন, পলাতক স্বৈরাচার ইচ্ছাকৃতভাবে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। এর পেছনে পার্শ্ববর্তী একটি দেশের স্বার্থ জড়িত ছিল বলে ধারনা করা যায়। আমরা স্বাস্থ্য খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবো। কারণ স্বনির্ভর দেশ গড়তে সুস্থ সবল নাগরিকের গুরুত্ব অনেক বেশি। 

তিনি বলেন, ২০১৪ সালে লন্ডনে একটি অনুষ্ঠানে আমি বলেছিলাম, ৫% এর বেশি কোটা থাকা উচিত নয়। ফ্যাসিস্ট সরকার কোটাপ্রথার লাগামহীন ব্যবহারের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে দলীয় লোকজন নিয়োগ দিয়েছিল। বিএনপি সেটা করব না। আমি বারবার বলেছি, কোটা নয় মেধার মুল্যায়ন করা হবে। দলীয় বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্তরা দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করে চলেছে। পলাতক স্বৈরাচারের দোসররা বসে নেই। বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে চাকরি প্রদান করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © 2024