মনিরামপু পৌষের শুরুতে তেমন একটা ঠান্ডা না থাকলেও মাসের শেষ দিকে এসে জেঁকে বসেছে শীত। রাত হলে ঘন কুয়াশা আর দিনের বেলা হিমেল বাতাসে কাহিল হয়ে পড়েছে জনজীবন। আবহাওয়ার এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেঁশি দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। এ ছাড়া ঠান্ডায় শিশু ও বৃদ্ধরা নিউমোনিয়াসহ শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন নিকটস্থ হাসপাতালে।যশোরের মনিরামপুরে মিলছে না সূর্যের দেখা তাই চরম ভাবে জেঁকে বসেছে শীত, হাড়কাঁপানো এই শীতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছে না মানুষ। তবে পেটের দায়ে অনেককে বাইরে বের হতে দেখা গেছে। শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকালে শীতের মধ্যেই উপজেলার রাস্তায় যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছেন খাটুয়াডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ভ্যানচালক হাবিবুর রহমান।তিনি বলেন, কনকনে শীতে পেটের দায়ে খুব সকালে ভ্যানগাড়ি নিয়ে বাজারে এসেছি, রাস্তাঘাটে কোনো লোকজন ছিল না। এখন কিছু মানুষ দেখা যাচ্ছে। এদিকে বাতাস হচ্ছে, এজন্য কেউ খোলা ভ্যানে উঠতে চাচ্ছে না। সবাই ইজিবাইক ও বাসে চড়ে চলে যাচ্ছে।শীতজনিত রোগীদের চাপ বেড়েছে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সহ আশে পাশের হাসপাতাল গুলোতে এই শীতে শিশু ও বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্ট জনিত নানা সমস্য নিয়ে প্রতিদিন বহির্বিভাগে ভিড় করছে।মনিরামপুর উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের সোহাগ হোসেন বলেন, কয়েকদিন আগে ঠান্ডাই আমার মেয়ে খুব অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায় মেয়ের অবস্থা খারাপ দেখে চিকিৎসক আমাদের যশোরে প্রেরণ করেন আলহামদুলিল্লাহ্ ডাক্তারের সেবায় আমার মেয়ে সুস্থ হয়েছে এবং শিশু বিশেষজ্ঞ ডক্টর শিশুদের ব্যাপারে শীতে খুব সতর্ক থাকতে বলেছেন, কোনো ভাবেই তাদের যাতে বেশি ঠান্ডা কিংবা গরম না লাগে। কোনো কারণে শিশু অসুস্থ হলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেছেন।তিন দিন ধরে মনিরামপুরে সূর্যের দেখা নেই। ঘন কুয়াশা আর হিম বাতাসে কাজে বের হতে পারছেন না শ্রমজীবীরা। রাস্তায় লোক চলাচল কমে গেছে। এদিকে কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসের কারণে বোরো বীজতলার ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। হিমেল বাতাসের কারণে জবুথবু হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে উত্তাপ নিতে দেখা গেছে।উপজেলার পৌর শহরে কথা হয় ভ্যানচালক নজরুল ইসলামের সঙ্গে তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ভ্যানগাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছি।শীতের শুরু থেকেই রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল কমে গেছে। তাই আয়ও কমেছে, প্রতিদিন যেখানে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় হয়। সেখানে এই শীতে ২০০ টাকাও আয় হয় না। শীত দীর্ঘস্থায়ী হলে জমিতে চাষাবাদ কমে যায়। তাই আমাদের মত প্রতিদিন খেটে খাওয়া মানুষের কর্ম ও আয় কমে যায়।এ দিকে আবহাওয়া অফিস বলছে, ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে আরও দুই থেকে তিন দিন কুয়াশা থাকতে পারে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল। সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে এবং দিনের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।
Leave a Reply